যুক্তরাষ্ট্রকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করল রাশিয়া

পশ্চিমা দেশগুলো আসলে আগুন নিয়ে খেলছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তা শুধু ইউরোপে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করেছে রাশিয়া।

৬ আগস্ট থেকে রাশিয়ার পশ্চিমের কুরস্ক অঞ্চলে আক্রমণ করে ওই অঞ্চলের একটি অংশের দখল নিয়েছে ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূখণ্ডে এটাই বিদেশি কোনো বাহিনীর সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘রাশিয়া এর সমুচিত জবাব দেবে।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, বিদেশ থেকে পাওয়া অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য পশ্চিমাদের কিয়েভের অনুরোধ বিবেচনায় নেওয়া ঠিক হয়নি। এটা করে তারা যুদ্ধের ব্যাপকতা আরও বাড়াতে চাইছে এবং ‘বিপদ ঘাড়ে তুলে নিচ্ছে’।

https://03ef0b6c935fbcfe8ddab11ca13bf0e4.safeframe.googlesyndication.com/safeframe/1-0-40/html/container.html

২০২২ সালে ইউক্রেনে আক্রমণ করে রাশিয়া। তখন থেকেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বারবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, বিশ্বের বৃহৎ পারমাণবিক শক্তিধর দেশগুলো জড়িয়ে পড়লে এ যুদ্ধ আরও বড় আকার নেওয়ার ঝুঁকিতে পড়বে। তবে তিনি বলেছেন, রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সঙ্গে যুদ্ধ জড়াতে চায় না।

গতকাল মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে লাভরভ বলেন, ‘আমরা আরও একবার নিশ্চিত করে বলছি, ছোট শিশুরা যেভাবে দেশলাই বাক্স নিয়ে খেলে, সেভাবে আগুন নিয়ে খেলা প্রাপ্তবয়স্ক চাচা-খালাদের জন্য খুবই বিপজ্জনক।’

তিনি আরও বলেন, আমেরিকানরা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ–সংক্রান্ত যেকোনো আলাপকে বিতর্কিতভাবে ইউরোপের ক্ষতির পরিপ্রেক্ষিতে দেখে। অর্থাৎ তারা ভাবে, ঈশ্বর না করুন, এটা যদি ঘটে, কেবল ইউরোপই তার ফল ভোগ করবে।

রাশিয়া তার পারমাণবিক নীতি (ডকট্রিন) আগেই পরিষ্কার করেছে বলেও জানান তিনি।
প্রেসিডেন্ট কখন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা ভাববেন, সে বিষয়ে রাশিয়ার ২০২০ সালের পারমাণবিক নীতিতে স্পষ্ট করে বলা আছে। মোটাদাগে, যখন দেশটি পারমাণবিক অথবা গণবিধ্বংসী অস্ত্রে হামলার শিকার হবে, যখন দেশটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

ইউক্রেনে নতুন করে রাশিয়ার হামলায় নিহত ৪, ভূপাতিত ৬০ ড্রোন

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ মাসের শুরুর দিকে বলেছিলেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হামলা দেখিয়ে দিয়েছে, ক্রেমলিনের প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি আদতে ভাঁওতা।

মিত্রদের দ্বারা আরোপিত বিধিনিষেধের কারণে ইউক্রেন রাশিয়ার কিছু সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার জন্য অস্ত্রগুলো ব্যবহার করতে পারছে না বলেও জানান তিনি। যুদ্ধে কিয়েভকে কীভাবে সাহায্য করা যায়, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় মিত্রদের আরও সাহসী হওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন জেলেনস্কি।

রাশিয়া বলেছে, ব্রিটিশ ট্যাংক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রকেটব্যবস্থাসহ কুরস্ক অঞ্চলে অভিযানে ইউক্রেন পশ্চিমাদের পাঠানো অস্ত্র ব্যবহার করছে। কিয়েভ কুরস্কে সেতু উড়িয়ে দিতে যুক্তরাষ্ট্রের এইচআইএমএআরএস ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

আরও পড়ুন

কিয়েভে একাধিক শক্তিশালী বিস্ফোরণ

ওয়াশিংটন থেকে বলা হয়েছে, কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের আকস্মিক অভিযানের পরিকল্পনার বিষয়ে তাদের কাছে কোনো তথ্য ছিল না। এই অভিযানের সঙ্গে তারা কোনোভাবে জড়িত না বলেও জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের এ দাবি মানতে নারাজ রাশিয়া। পুতিনের বৈদেশিক গোয়েন্দাপ্রধান সের্গেই নারিশকিন গতকাল বলেছেন, কুরস্ক আক্রমণের বিষয়ে কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা না থাকার যে দাবি পশ্চিমারা করছেন, মস্কো তা বিশ্বাস করে না।

রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘অবশ্যই’ জড়িত।

Leave a Reply